‘মৃত্যু নাই, নাই দুঃখ, আছে শুধু প্রাণ’- জাতীয় কবির ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী
শোষিত মানুষের মুক্তির গান গাওয়া কবি, অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রামের কবি, মানবতার প্রেম ও সাম্যবাদের চেতনায় উজ্জীবিত কবি কাজী নজরুল ইসলামের আজ ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের আজকের দিনে তৎকালীন পিজি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
কবি নজরুল তার সাহিত্য ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলায় পরাধীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। এ কারণে ইংরেজ সরকারের জেল-জুলুমের স্বীকার হন তিনি। কিন্তু কখনোই আপোষ করেন নি।
কবি নজরুলের কবিতা, গান এবং সাহিত্য বাংলা সাহিত্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তাঁর লেখা ও গান মানুষের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের পথ দেখিয়েছে। তিনি চিরপ্রেমের কবি ছিলেন, যেমন তিনি নিজেই বলেছিলেন, ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরি আর হাতে রণ-তূর্য।’
১৯৩৯ সালে, যখন তাঁর বয়স ছিল ৪০ বছর, তিনি ‘মৃত্যু নাই, নাই দুঃখ, আছে শুধু প্রাণ’ নামক বিখ্যাত গানটি রচনা করেন। এ গানটির বাণী থেকে স্পষ্ট যে, তিনি মৃত্যুকে জয় করে অফুরন্ত প্রাণের সন্ধান পেয়েছিলেন। গানটির মধ্যে তিনি লিখেছেন, ‘মৃত্যু নাই, নাই দুঃখ,/ আছে শুধু প্রাণ/ অনন্ত আনন্দ হাসি অফুরান।’
১৯৪০ সালে, তাঁর বয়স ছিল ৪১, তিনি গানে প্রকাশ করেছিলেন—‘মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই’, ‘যেন গোরে থেকেও মুয়াজ্জেনের আজান শুনতে পাই’। তাঁর আজানের প্রতি এই গভীর প্রেম ও আকর্ষণ প্রকাশ পায়, এবং গানটিতে ১৯৪০ সালে মো. কাসেম কণ্ঠ দেন, এতে সুর করেছিলেন কবি নিজেই। কবির আকাঙ্খা অনুযায়ী জাতীয় কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন।
জনআ-০১