ভারতের বিহারে গরুর গোশত পাচারের অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭

Share

ভারতের বিহারে গরুর গোশত পাচারের সন্দেহে জহিরুদ্দিন মিয়াঁ (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত (বুধবার) দিবাগত গভীর রাতে সারণ জেলার জালালপুর থানা এলাকার চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কমপক্ষে ২০ জন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিস। এদের মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। পারসটুডে

পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত ব্যক্তি মাঝওয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। বুধবার মধ্যরাতে গাড়িতে করে পশুর হাড় নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। বাজারের কাছাকাছি একটি জায়গায় গাড়ি খারাপ হলে তিনি ও তার সহায়ক তা ঠিক করার চেষ্টা করছিলেন। এ সময়ে গন্ধ পান স্থানীয়রা। তাদের সন্দেহ ছিল যে গাড়িতে করে গরুর গোশত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা গাড়ির ভিতরে রাখা বাক্স খুলতে বলেন তাকে। বাক্স খুলতেই হাড়গোড় দেখতে পান স্থানীয়রা। এরপরই ওই ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করা হয়।

জানা গেছে, জহিরুদ্দিন হাড়গুলো নিয়ে যাচ্ছিলেন লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি কারখানায়। কারখানার মালিক হায়দার বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জড়ো হয়ে ট্রাকে মালামালের বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করে। তারা যখন উত্তর দেয় যে ট্রাকে পশুর হাড় রয়েছে এবং এটি নাগরার কারখানায় যাচ্ছে, তখন তারা তাকে মারধর শুরু করে। গাড়ির সহায়ক এবং অন্য শ্রমিক ঘটনাস্থল থেকে পালাতে সক্ষম হলেও জহিরুদ্দিনের পায়ে লোহার রডের আঘাত লাগায় তিনি পালাতে পারেননি। জনতা তাকে নির্মমভাবে মারধর করে যতক্ষণ না তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।’

এদিকে, পুলিসের কাছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গবাদি পশুর হাড় পাচারের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, হাড়গুলো ফরেনসিক টেস্টে পাঠানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে, নিহত ট্রাক চালকের স্ত্রী জেবুন্নিসা তার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ সুপার গৌরব মংলা বলেন, ওই ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২০ জনের বেশি আটক হয়েছে। ৭ জনের ভূমিকা স্পষ্ট হওয়ার পর তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

এসপি বলেন, আইন হাতে তুলে নিলে কেউ রেহাই পাবে না। বিহারের সারণ জেলায় গত মার্চের পর এটি দ্বিতীয় গণপিটুনির ঘটনা। গত ৭ মার্চ, সিওয়ানের বাসিন্দা ৫৪ বছর বয়সী নাসিম কুরেশিকে গরুর গোশত বিক্রি করার অভিযোগে হত্যা করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় সে সময়ে তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

Leave A Reply