প্রতিবেদন:
১৯৭১ সনে স্বাধীনতার পর আন্দোলন-সংগ্রামের রূপ ও চরিত্র বদলে যায়। গড়ে ওঠে একমাত্র বিরোধী দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। ১৯৭৫ সনের ৭ই নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ‘সিপাহী জনতার গণ-অভ্যুত্থান’ বাঙ্গালির জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। জাসদ গঠন এবং ‘সিপাহী জনতার গণ-অভ্যুত্থান’ এর নেপথ্য পরিকল্পনাকারী ছিলেন সিরাজুল আলম খান। আর এই দুটি বৃহৎ ঘটনার নায়ক ছিলেন মেজর জলিল, আ স ম আবদুর রব , কর্ণেল আবু তাহের কাজি আরেফ আহমেদ ও শরীফ নুরুল আম্বিয়া।
আর্থ-সামাজিক বিশ্লেষনে সিরাজুল আলম খানের তাত্বিক উদ্ভাবন বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়। মার্কসীয় ‘দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদে’র আলোকে বাংলাদেশের জনগণকে শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবী হিসাবে বিভক্ত করে ‘রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক’ মডেল হাজির করেছেন সিরাজুল আলম খান। চিরাচরিত পার্লামেন্টারী ধাঁচের ‘অঞ্চল ভিত্তিক’ প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি শ্রম,কর্ম, পেশায় নিয়োজিত সমাজ শক্তি সমূহের ‘বিষয় ভিত্তিক’ প্রতিনিত্বের ব্যবস্থা সংবলিত ‘দুই কক্ষ’ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন, ফেডারেল সরকার ব্যস্থা প্রবর্তন, বাংলাদেশকে কয়েকটি প্রদেশে ভাগ করে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন এবং প্রাদেশিক সরকার গঠন, উপজেলা পর্যায়ে স্ব-শাসিত স্থানীয় সরকার পদ্ধতি চালু করার মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ-পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক আইন ব্যবস’া ও শাসন কাঠামোর পরিবর্তে স্বাধীন দেশের উপযোগী শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার মডেল উত্থাপন করেন তিনি। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তা সমূহের স্বীকৃতির প্রয়োজনও তাঁর চিন্তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশকে শিল্পায়ন করার লক্ষ্যে প্রবাসীদের অথায়নে ‘উপজেলা শিল্প এলাকা’ এবং ‘পৌর শিল্প এলাকা’ গঠন করার তাঁর প্রস্তাব ইতিমধ্যেই সবার দৃষ্টি আকর্ষন করেছে।।
আজকে জাসদ ত্রিধাবিভক্ত হয়ে সিরাজুল আলম খানের অনুসারীরাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।তারা কেউ সিরাজুল আলম খানের বর্তমান রাজনীতিকে অস্বীকার করছেন না।কেউ পুরোপুরিভাবে কেউ আংশিকভাবে সিরাজুল আলম খানের রাজনৈতিক মডেলকে গ্রহণ করছেন।আমার বিশ্বাস সিরাজুল আলম খানের বর্তমান রাজনৈতিক দর্শনকে সামনে রেখেই জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সবম অংশভাগ নিয়েই জাসদীয় ঐক্য গড়ে উঠতে পারে।আওয়ামীলীগ বা বিএনপি জাতীয় বুর্জোয়া দলের লেজুড়বৃত্তি পরিত্যাগ করে সব অংশের নেতাকর্মীদের নিয়ে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রাজনৈতিক বিকল্প শক্তি গড়ে তোলাই হবে আশু করনীয়।।
(আহমেদফজলুর রহমানের ফেইসবুক পেইজ থেকে)