প্রতিবেদন:
ডলার সংকটে ভুগছে বিশ্ব, অনেক দেশের রিজার্ভে টান পড়েছে; তাই তরতর করে কমছে স্থানীয় মুদ্রার মান, বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি-জীবযাপন ব্যয়। রাশিয়া ইউক্রেন সংঘাতের পর থেকে সেই সমস্যা হয়েছে আরও প্রকট। ডলারের বিপরীতে রুবলের মান কমতে থাকায় এক আগ্রাসী ঘোষণা দিয়েছিলেন পুতিন। বলেছিলেন, ‘অবন্ধুসুলভ’ দেশগুলোকে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল-গ্যাস কিনতে হবে রুশ মুদ্রা রুবলে। এরপর থেকেই তরতর করে ডলারের বিপরীতে বাড়ে রুবলের মান। ইউরোপের কয়েকটি দেশ দেশ এখন রাশিয়ার কাছ থেকে রুবলে জ্বালানি কিনছে। সেই সাথে তুরস্কের মতো কয়েকটি রুশ মিত্রও দেশও রুবলে লেনদেনের পথে হাঁটছে।
এরমধ্যেই আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে প্রভাবশালী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক জোট ব্রিকস। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট পূর্ণিমা আনন্দ জানিয়েছেন, ভারত ও রাশিয়া এখন থেকে ডলারের পরিবর্তে রুপি ও রুবলে নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য করবে। ফলে দুই দেশের লেনদেনে আর ডলারের দরকার নেই।
পূর্ণিমা বলেন, ‘রুপি ও রুবলে লেনদেনের বিষয়ে আমরা সমঝোতায় পৌঁছেছি। ভারত ও রাশিয়া মধ্যে পরস্পরের বাণিজ্যে এখন আর ডলারের দরকার নেই।’
বুধবার চীনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাইয়ে সংস্থাটির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ তিনি একথা জানান।
পূর্ণিমা আরও বলেন, ‘এর অর্থ দাঁড়ায় ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর জন্য রাশিয়ার দরজা খুলে গেল। নিষেধাজ্ঞার ধকল কাটাতে এটা বড় সুযোগ।’কেবল ভারত নয় চীনও রাশিয়ার সাথে লেনদেনে ডলারের পরিবর্তে ইউয়ান ও রুবল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই জানিয়েছেন ব্রিকস প্রেসিডেন্ট।
উল্লেখ্য, পশ্চিমাদের হুঁশিয়ারি ও হুমকি সত্ত্বেও ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি অব্যাহত রাখে ব্রিকসভুক্ত দেশ ভারত ও চীন। ফলে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় কাবু হওয়ার বদলে রাশিয়ার জ্বালানিখাতের আয় আরও বেড়েছে। এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশ ঝুঁকছে রুশ জ্বালানির দিকে। আর লেনদেন নিজস্ব মুদ্রায় করার এই পরিকল্পনা ডলারের চাহিদাও অনেকটা কমাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এই চার দেশ নিয়ে ২০০৯ সালে গঠিত হয় অর্থনৈতিক ও আন্তঃসরকার সংস্থা ব্রিক। পরে ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা যোগ দেয়, সংস্থাটির নাম হয় ব্রিকস।
সূত্র: আরটি