শনিবার (১৩ আগস্ট) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশকে বেহেশতের সঙ্গে তুলনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য উপহাস ও তামাশা, উন্নয়নের নামে হাতে হ্যারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে সরকার।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লোডশেডিং, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে দেশের মানুষ যখন প্রতিমুহুর্ত কাটাচ্ছে ভোগান্তিতে, জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন, দুর্বিসহ এ অবস্থায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, দেশের মানুষ বেহেশতে আছে। জন দুর্ভোগের সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এহেন বক্তব্য প্রদানের অধিকার নেই।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে বিশেষ দায়মুক্তি আইন তৈরি করে দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য সংশ্লিষ্ট আমলা-প্রকৌশলীদের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। তবে যদি সময় আসে তাহলে আমরা (বিএনপি) এর বিচার করব।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার গত দেড় দশক ধরে উন্নয়নের যে ঢোল বাজিয়ে আসছে তন্মধ্যে একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল বিদ্যুৎ খাত। দাবি করা হচ্ছে যে ২০২২ সালে এসে ক্যাপাসিটিসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে এবং সর্বোচ্চ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। গত ১০ জুলাই ২০২২ সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ১১ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট।
তিনি বলেন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার উচ্ছ্বাস উদযাপন করা হলো ঘটা করে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এত নজিরবিহীন অর্থ ব্যয় করেও কেন পুনরায় দেশের জনগণকে লোডশেডিং বরণ করতে হচ্ছে, আজ কেন তবে বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, কেন আজ অন্ধকারাচ্ছন্ন দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, কেন সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে, কেন বিদ্যুৎ খাত আজ অর্থনীতির জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে? এর উত্তর একটাই, সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি আর হরিলুটের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের বিশেষ আইনে স্থাপিত রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল ১৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর দুই-তিন বছরের পর বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও প্রয়োজন ছাড়াই তা এখনো চালু আছে। বেশ কিছু রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন না করেও ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ বিপুল অর্থ নিয়ে যাচ্ছে।