টেস্টে হারের সেঞ্চুরি, হোয়াটওয়াশের লজ্জা বাংলাদেশের

Share

টানা বৃষ্টিতেও শেষ রক্ষা হলো না। দশ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১২ রানের লিড নিতে পেরেছিল সফরকারীরা। ক্যারিবীয় দুই ওপেনার ২.৫ ওভার ব্যাট করেই সহজ লক্ষ্য টপকে যায়। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের দল।
মুমিনুলের অধীনে টেস্টে ব্যর্থতার পর সাকিবের নেতৃত্বে নতুন শুরুর আশায় ছিল বাংলাদেশ। তবে এবারের শুরুটা হলো আরও ভয়াবহ। লজ্জার হোয়াইটওয়াশে আরও একটি রেকর্ডও গড়েছে বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটে হারের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছে টিম টাইগার্স। ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ২২ বছরে ১৩৪টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ দল। যেখানে ১০০ হারের বিপরীতে টাইগারদের জয় ১৬টি ও ড্র আছে ১৮টি।

অ্যান্টিগায় তিন দিনেই পরাজিত হয়েছিল সাকিব বাহিনী। সেন্ট লুসিয়ায় সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচেও একই চিত্রনাট্য। ব্যাটারদের ভরাডুবিতে তিন দিনেই আবারও হারের শঙ্কা চেপেছিল। যদিও বৃষ্টি ভাগ্যে শেষমেশ তা হয়নি। খেলা গড়ায় চতুর্থ দিনে। ভাগ্যদেবতা হয়তো আরও কিছুক্ষণ লজ্জা থেকে বাঁচাতে চেয়েছিল ‘নির্লজ্জ’ বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের!

আর তাই চতুর্থ দিনের দুটি সেশন বৃষ্টিতে মাঠেই গড়ায়নি। তৃতীয় সেশনে স্থানীয় সময় বিকেলে খেলা শুরু হতেই আবারও সেই বিপর্যয়। আগের দিনে বাকি থাকা চার উইকেট টিকল মাত্র ৫৪ বল। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮৬ রানেই গুঁড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস।
যদিও নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে ভর করে কোনো রকমে ইনিংস হারের লজ্জা এড়ায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা উইকেটকিপার এ ব্যাটার ৫০ বলে ৬০ রানের ক্যামিওতে দলকে লিড এনে দেন। তবে যোগ্য সঙ্গ না পাওয়ায় মাত্র ১২ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।

সহজ লক্ষ্য পেরোতে ক্যারিবীয়দের খরচ করতে হয়েছে কেবল ১৭ বল। কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের দল।

এর আগে চতুর্থ দিনে সোমবার (২৭ জুন) দুই সেশন বৃষ্টির কারণে ভেস্তে গেছে। তবে স্থানীয় সময় সকালের পর বৃষ্টি তেমন একটা না থাকলেও ভেজা আউট ফিল্ডের কারণে বার বার পিছিয়ে যায় খেলা শুরুর সময়। প্রথমে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়ার কথা ছিল। এরপর অপেক্ষাটা কেবল বেড়েছে। যদিও মাঠকর্মীদের আপ্রাণ চেষ্টায় শেষমেশ সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে বল গড়ায়।
খেলা শুরু হওয়ার পর মিরাজের দ্রুত পতনে শঙ্কা জেগেছিল ইনিংস হারের। যদিও ‍দৃঢ়প্রত্যয়ী সোহানের ব্যাটে সে লজ্জা এড়ায় বাংলাদেশ। শেষ দিকে তিন টেল এন্ডার শরিফুল, এবাদত আর খালেদ রানের খাতা খুলতে না পারায় লিড বড় হয়নি বাংলাদেশের।

ব্যর্থতার এ সিরিজে বাংলাদেশের প্রাপ্তি অবশ্যই পেসারদের দাপট। ব্যাটারদের বার বার ব্যর্থতার মিছিলেও হাল ধরার চেষ্টা করে গেছেন পেসাররা। এছাড়া আলো ছড়িয়েছেন খালেদ আহমেদও। গত মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন বাংলাদেশের পেসার খালেদ আহমেদ। তবে পাঁচ উইকেটের দেখা পাননি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট। মাঝে লঙ্কানদের বিপক্ষে উইকেটশূন্য ছিলেন ডানহাতি এ পেসার। অবশেষে নিজের আক্ষেপ ঘোচালেন খালেদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে এসে পাঁচ উইকেটের দেখা পেলেন তিনি।

অন্যদিকে, ২৫০ টেস্ট উইকেট শিকার করে নিজেকে গ্রেটদের কাতারে নিয়ে গেলেন ক্যারিবীয় পেসার কেমার রোচ। যদিও এ সিরিজে তিনি খেলবেন কি না সেটি নিয়েই ছিল অনিশ্চয়তা। শেষ মুহূর্তে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্তি হয় তার। দলে ফিরেই রাঙালেন। দলও তার মাইলফলকের মুহুর্তে সিরিজ জয় উপহার দিল।

Leave A Reply