রেলপথে মেঘালয়: বাংলাদেশ ট্রানজিট দিলে দু’দিনের পথ হবে ২ ঘণ্টার

Share

পশ্চিমবঙ্গের হিলি সীমান্ত থেকে সড়কপথে ভারতের পূর্বের মেঘালয় রাজ্যের তুরা সীমান্তে পৌঁছতে সময় লাগে দুই দিন৷ যেখানে বাংলাদেশ ট্রানজিট সুবিধা দিলে এই যাতায়াতের সময় নেমে আসতে পারে মাত্র ২ ঘণ্টায়! সম্প্রতি ভারতের রেল দপ্তরের তরফে এই রুটের ডিটেলস প্রজেক্ট স্টাডি করে পাঠানো হয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনের জন্য।

স্বাধীনতার পর থেকে ভারত সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের হিলি-তুরা রেল যোগাযোগ-সংক্রান্ত একাধিক বৈঠক হয়েছে। ২০১২ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি সীমান্তের সঙ্গে মেঘালয়ের তুরার রেল যোগাযোগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি ফর করিডর।

সংগঠনটির আহ্বায়ক নবকুমার দাস। তার দাবি এই করিডর বাংলার দিগন্ত খুলে দেবে, দুই দেশের অর্থনৈতিক সুরক্ষার প্রশ্নে এই করিডর একটা বিকল্প পথের সন্ধান দেবে। পাশাপাশি মেঘালয়সহ সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে পূর্ব ভারতের মধ্যে যোগাযোগে এই করিডর হয়ে উঠবে সহজ ও দ্রুত যোগাযোগের পথ।

এ নিয়ে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের সড়ক ও পরিবহনমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে রাষ্ট্রপতিসহ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে করিডর কমিটি।

সম্প্রতি কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম এই করিডর নিয়ে একটি ৭০০০ কোটি রুপির প্রজেক্ট রিপোর্ট কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রণালয় এবং রেল বোর্ডে পাঠিয়েছেন। যেখানে রেলপথে বাংলাদেশের গাইবান্ধা হয়ে করিডর ধরে তুরা পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র দুই ঘণ্টা৷ ৬৭০ কিলোমিটারের দুর্গম রাস্তা রেলপথের সহজ যোগাযোগে নেমে আসবে মাত্র ১২০ কিলোমিটারে। রেলপথের প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি অংশই নির্মাণ করতে হবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে।

জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি ফর করিডর সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতোধ্যেই সহমত হয়েছে। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার সঙ্গে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতেে ভারতের রেল মানচিত্রে মেঘালয়কে যুক্ত করতে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা শুরু করেছে ভারত।

এই প্রকল্পের জন্য টাকার অভাব হবে না বলে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন। তবে সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন তখনি সম্ভব যখন বাংলাদেশ সরকার ভারতকে এই রুটের ট্রানজিট সুবিধা দিতে সহমত হবে।

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি থেকে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে এই করিডর চালু হলে ভারতের দুই রাজ্য ছাড়াও বাংলাদেশের উত্তরের জেলাগুলোর মধ্যে রেল যোগাযোগের নতুন মাধ্যম খুলে যাবে। পাশাপাশি দুই দেশ এবং দুই রাজ্যের মানুষের মধ্যে কৃষি, খনিজ ও অনান্য সামগ্রী আদান-প্রদান সহজ হবে। সেইসঙ্গে সংস্কৃতি ও পরিবেশের মেলবন্ধন ঘটবে।

সমকাল

Leave A Reply