ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য বাংলাদেশিদের দিকে আঙ্গুল তোলা হচ্ছে। যদিও এর পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই কিন্তু তারপরেও সেখানকার পুলিশ, রাজনীতিবিদ এবং গণমাধ্যমও বাংলাদেশিদের সংশ্লিষ্টতার কথা বলছে। এক টিভি সাক্ষাৎকারে দিল্লি পুলিশের মেধা লাল নামের কর্মকর্তা বলেন, দাঙ্গাকারীরা যে স্লোগান দিচ্ছিল তা শুনতে বাংলাদেশি ভাষার মতো লাগে। অপরাধীদের চিহ্নিত করতে গিয়ে তিনি কথিত বাংলাদেশিদেরই দুষলেন।
স্ক্রলডটইন বলছে, শুধু পুলিশ নয়, সেখানকার শক্তিশালী রাজনীতিবিদরাও একই সুর তুলেছেন। যে এলাকায় ওই দাঙ্গা হয়েছে সেই জাহাঙ্গীরপুরীতে অনেক বাঙালি হিন্দু ও মুসলিম বাস করেন। তারা সকলেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে সেখানে স্থায়ী হয়েছেন। কিন্তু প্রায়ই তাদেরকে বাংলাদেশি বলে আক্রমণ করতে দেখা যায়।
শনিবারের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর দিল্লি বিজেপি প্রেসিডেন্ট আদর্শ গুপ্ত বলেন, রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অভিবাসীরাই এর পেছনে দায়ী। তাদেরকে দিল্লি থেকে বের করে দিতে হবে। বাংলাদেশিদের নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বিজেপি। এমনকি আম আদমি পার্টিও বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের উপরেই দায় চাপিয়েছে। ডানপন্থী গণমাধ্যমগুলোও কম যায় না। হিন্দি সংবাদপত্র দৈনিক জাগরণ অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এক লাখ বাংলাদেশি জাহাঙ্গীরপুরীতে স্থায়ী হয়েছে।
ভারতের আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর আদিল হোসেইন স্ক্রলডটইনে লিখেছেন, বাঙালি মুসলিমদের বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা কোনো নতুন ঘটনা নয়। অথচ ভারতে যে পশ্চিমবঙ্গ নামে একটি রাজ্য আছে আর তাতে যে ৩ কোটি মুসলিম বাস করেন তা এই পুলিশ ও রাজনীতিবিদরা ভুলে যান। বাংলা এই মুসলিমদের মাতৃভাষা। অথচ সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই বাংলাভাষীদের নিয়ে ভুল ধারণা ঠাসা।
২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের অধীনে বাংলাভাষী মুসলিমদের উপর সবথেকে বড় আঘাত আসে আসামে। সেখানে নথিহীন বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা হয়। বিজেপি নেতারা বেশ স্পষ্ট করেই জানান, এই আইন করা হয়েছে শুধু আসামে থাকা বাঙালি মুসলিমদের টার্গেট করে।