বরিশাল নগরীতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই শিশু শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে স্কুল তালাবদ্ধ করে রেখে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে বাচ্চাদের ডাক চিৎকার ও কান্নাকাটির শব্দ পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় স্কুল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষিকাসহ সকলে চলে গেলে দপ্তরিও স্কুল গেটে তারা মেরে দেন। ওদিকে অংক শেষ করে রুম থেকে বেড়িয়ে শিশু দুটি গেটে তালা মারা দেখে ভয়ে আতংকিত হয়ে পরে।
প্রায় এক ঘন্টা পর তাদের ডাক চিৎকার ও কান্নাকাটির শব্দ পেয়ে স্থানীয় একটি মেয়ে এগিয়ে আসে। তবে স্কুলের গেটে তালা থাকায় ভিতরে যেতে পারেনি সে। পরে মারজানের কাছ থেকে তার বাবা জামাল শিকদারের মোবাইল নাম্বার নিয়ে তাকে ফোন করে। তার মাধ্যমে মারজানের মা শিরিন আক্তার জানতে পেরে স্কুলে ছুটে আসেন। কিন্তু তখনও স্কুলের গেটে তালা মারাই ছিলো।
শিরিন জানান, দৌড়ে স্কুলের দপ্তরি ইমরানের বাড়িতে যান। কিন্তু ইমরান তার সঙ্গে রেগে গিয়ে অপমান অপদস্ত করেন। যদিও এক পর্যায় ইমরান স্কুলের গেটে খুলে দেয়। এরইমধ্যে পুলিশ ও স্থানীয় জনতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিশু দুটিকে উদ্ধার করে। পরে জনরোস থেকে বাঁচতে দপ্তরি স্কুলের ভেতর থেকে নিজেকে তালাবদ্ধ করে রাখে। এ ঘটনায় আতংকিত শিশু মারজান রাতের বেলায় জ্বরে আক্রান্ত হয়।
মারজানের মা আরো জানান, সে রাতে ঘুমের মধ্যে বারবার চিৎকার দিয়ে ওঠে। তিনি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমুলক বিচার দাবী করেছেন।
স্থানীয়রা মনে করেন, যদি রাত পর্যন্ত শিশু দুটি ওখানে থাকতো তবে অন্ধকারে আতংকিত হয়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনাও ঘটতে পারতো। তারা এরকম কাণ্ডজ্ঞানহীন শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শান্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তানিয়া সুলতানার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
যদিও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেননি স্বীকার করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মজুমদার বলেন, এটি একটি গর্হিত কাজ হয়েছে। সরেজমিনে জানতে বৃহস্পতিবারই স্কুল পরিদর্শন করেছি। সেই সঙ্গে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
আগামী রোববারের মধ্যেই এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে চাকুরি বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।