গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বমেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কিলোমিটার দূরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঘোনাপাড়া মোড়ে ধর্ষকদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মহসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে ।বৃহস্পতিবার বেলা ১০টায় গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া মোরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ সড়কের মিলিতস্থান ঘোনাপাড়া মোড়ে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় তারা ধর্ষণের প্রতিবাদে ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় ধর্ষকের ঠাই নাই’ ‘আমার বোন ধর্ষণ কেন, প্রশাসন জবাব দে’ সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে।
এছাড়া ধর্ষকদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান তারা। ধর্ষকদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত তারা এ বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলেন ঘোষণা দেন। বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দলে দলে মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা সড়কে বিভিন্ন স্লোগান লিখে ও একেঁ প্রতিবাদ জানান।
অপরদিকে, সড়র অবরোধের কারণে ঢাকা ও খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা শত শত বাস, মালবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন মহাসড়কে আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি করে। এতে দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা।
বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী তার এক বন্ধুর সঙ্গে গোপালগঞ্জ শহরের হেলিপ্যাড থেকে নবীনবাগের তার মেসে ফিরছিলেন। এ সময় ৪-৫ জন দুর্বৃত্ত তাদের গতিরোধ করে এবং বন্ধুকে মারধর করে ওই ছাত্রীকে পার্শ্ববর্তী নবনির্মিত জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজ ভবনের মধ্যে নিয়ে গণধর্ষণ করে। বুধবার রাতে এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জ থানা ঘেরাও করে।
বশেমুরবিপ্রবি’র ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমাদের এক সহপাঠী বুধবার রাতে বাসায় ফিরার সময় গণধর্ষনের শিকার হয়েছেন। ধর্ষকদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে আমরা আন্দোনল করছি। আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ। ভিডিও ফুটেজ দেখে যতক্ষণ না পর্যন্ত ধর্ষক শনাক্ত হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছে। ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে ওই রাতেই দুই জনকে আসামি করে বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেছি।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ান বলেন, ইতোমধ্যে আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে থানায় এনেছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।