ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার ট্যাঙ্ক বহরের প্রবেশ : মূল ভূখন্ডে আক্রমণের আশঙ্কা

Share

পশ্চিমের কূটনীতিকেরা এবং পূর্বাঞ্চলীয় ডনেস্কের বাসিন্দারা মঙ্গলবার রাতে সেখানে রাশিয়ার ট্যাংকের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন।

ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে বহুমাস ব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক অচলাবস্থা যখন আরও বিপজ্জনক মোড় নিচ্ছে, তখন পশ্চিমি দেশগুলো সম্মিলিত ভাবে নিন্দায় শামিল হচ্ছে এবং অন্যান্য দেশের সরকারেরা তাদের কূটনীতিকদের কিয়েভ ত্যাগ করে পোলিশ সীমান্তের কাছে পশ্চিমাঞ্চলীয় লেভিভে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। এর মধ্য দিয়েই তাদের ক্রবর্ধমান আশংকা ব্যক্ত হচ্ছে যে ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েনরত রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনের রাজধানী দখলের নির্দেশ হয়তোবা শীগ্রই দেয়া হবে।

অস্ট্রেলিয়া হচ্ছে সর্বশেষ দেশ, যারা তাদের মিশন সরিয়ে নিল। তারা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অন্যান্যদের মতো তাদের, রাষ্ট্রদূত ও মিশন কর্মীদের নিরাপদে পার্শবর্তী পোল্যান্ডে সরিয়ে নিচ্ছে।

নির্ধারিত সময়ের ২ ঘন্টা পরে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি ইউক্রেনের জনগণকে পুনরায় আশ্বস্ত করার প্রয়াস নেন এবং বলেন তার দেশ সুরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে এবং আরো রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের নিজেকে রক্ষা করার অধিকার রয়েছে।

জেলেন্সকি বলেন “আমরা আমাদের ভূমিতে, আমরা কারও জন্য বা কোনো কিছুতে ভীত নই”। পশ্চিমি দেশগুলোর নেতারাও রাশিয়ার হুমকির জবাব কি ভাবে দেয়া এবং কি করে তাদের পদক্ষেপের সমন্বয় ঘটানো যায় সেই নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের এখনও আশা যে কূটনীতির মাধ্যমে এর সুরাহা হতে পারে। ইইউ কর্মকর্তারা ভাবছেন পুতিনকে ফুসলিয়ে কিংবা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে সংযত করা যেতে পারে; তবে কুটনৈতিক পদ্ধতি যে কাজ করবে সে আশা দ্রুতই ম্লান হয়ে আসছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানায়, যারা এই অবৈধ কাজে নিয়োজিত তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। নেটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ রাশিয়াকে পূর্বাঞ্চলীয় ইউক্রেনের সংঘাতে মদদ জোগানোর জন্য এবং আরো হামলার অজুহাত খোঁজার জন্য দোষারোপ করেন।

বিচ্ছিন্ন প্রজাতন্ত্র গুলোকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে পুতিন বলেছেন ইউক্রেন রাশিয়ার ইতিহাসে একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং পূর্বাঞ্চলীয় ইউক্রেন প্রাচীন রাশিয়ার একটি অঞ্চল।
পুতিন তার ভাষণে যুক্তরাষ্ট্র ও নেটোকে নির্লজ্জ ভাবে ইউক্রেনকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার জন্য দোষারোপ করেন। তিনি কোন রকম প্রমাণ ছাড়াই এ রকম দাবিও উত্থাপন করেন যে ইউক্রেন পরমাণু অস্ত্র নির্মাণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যা কীনা তারা রাশিয়াকে হামলা করতে ব্যবহার করতে পারে।

সীমান্ত বরাবর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে গোলাগুলি বা আর্টিলারি বোমা হামলার জবাব না দেয়ার কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকেরা বলছেন যে এই পরিস্থিতি গত সপ্তাহে নাটকীয় ভাবে আরও ঘনীভূত হয়েছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন রাশিয়া আরো বড় মাপের অভিযান চালাতে সংঘাতকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করতে পারে।

Leave A Reply