হেনস্থার শিকার লেবার নেতা কিয়ার স্টারমার

Share

জনমত ডেস্ক:সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ওয়েস্টমিন্সটারে পার্লামেন্টের কাছে লেবার নেতা স্যার কিয়ার স্টারমারকে ঘিরে ফেলে প্রতিবাদী জনতার একটি দল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবাদী জনতাকে এ সময় কিয়ার স্টারমারকে বিশ্বাসঘাতক বলে ডাকতে শোনা যায়। আরেকটি ভিডিওতে স্যার কিয়ার স্টারমারকে উদ্দেশ করে জিমি সাভিল ডাকতে শোনা যায় একজনকে। প্রতিবাদী জনতার ঘেরাও থেকে কিয়ার স্টারমারকে মুক্ত করে পুলিশ তাঁকে গাড়িতে তুলে নিরাপদে সরিয়ে নেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ট্রাফিক কউন নিক্ষেপ করার দায়ে ঘটনাস্থল থেকে একজন পুরুষ এবং একজন মহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সরকারের ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে সমর্থন দেয়ার কারণে পার্লামেন্ট এলাকায় সোমবার প্রতিবাদী জনতা লেবার নেতার তীব্র সমালোচনা করছিল। বাধ্যতামূলক টিকাদান এবং কোভিড স্বাস্থ্যবিধির বিরুদ্ধে স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায় তাদের হাতে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সমালোচকেরা বলছেন, বরিস জনসনই তাদেরকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে লেবার নেতার বিরুদ্ধে উস্কে দিয়েছেন। এর দায় তাঁকে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ব্রিটেনের ইতিহাসে কুখ্যাত এক যৌন অপরাধী ছিল বিবিসি’র সেলিব্রিটি জিমি সাভিল। সে যখন জীবিত ছিল, তখন পাবলিক প্রসিকিউশন্স এর পরিচালক ছিলেন স্যার কিয়ার স্টারমার। পার্লামেন্টে এই তথ্য উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক সপ্তাহ আগে লেবার নেতাকে আক্রমণ করে মিথ্যা অভিযোগ করে বলেন, কিয়ার স্টারমার জিমি সাভিলকে বিচারের মুখোমুখি করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর তিনি ব্যপকভাবে সমালোচিত হন। নিজের বক্তব্য আরও স্পষ্ট করলেও ওই মন্তব্যের জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেননি।
সোমবার কিয়ার স্টারমারকে ঘিরে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে অনলাইনে প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, বিরোধী দলীয় নেতার সাথে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত ঘৃণ্য। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাথে যে কোন ধরনের হয়রানিমূলক আচরণ সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নিজের দলেরই কিছু এমপি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে আরও খোলাসা করে কথা বলতে হবে। কনজারভেটিভ দলের মন্ত্রীসভার সাবেক সদস্য জুলিয়ান স্মিথ বলেন, আমাদের গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং স্যার কিয়ার স্টারমারের নিরাপত্তার স্বার্থে জিমি সাভিল সম্পর্কিত প্রধানমন্ত্রীর নিন্দাবাদ সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নেয়া সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখনও তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা। কিয়ার স্টারমার সম্পর্কে মন্তব্য করার পর দুঃখ প্রকাশ করতে ব্যর্থ হওয়ার বরিস জনসন ইতোমধ্যে তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ এক উপদেষ্টাকে হারিয়েছেন। মুনিরা মির্জা বরিস জনসনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন এক দশকেরও বেশী সময়। কিন্তু বরিস জনসনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে গত সপ্তাহে তিনি পদত্যাগ করেন।
ওয়েস্টমিন্সটারে পার্লামেন্ট এলাকায় বিক্ষোভ নতুন কিছু নয়। ব্রেক্সিটের পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিবাদ কিংবা লকডাউনবিরোধী প্রতিবাদ অনেক কারণেই নিয়মিত সমাবেশ হয়। কিন্তু সোমবারের এই ঘটনায় নানা কারণে জড়িয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রীর নাম।

Leave A Reply